যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গত ১৪দিনেককরোনায়আক্রান্ত আইসিইউ,এইচডিইউও রডজোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা অক্সিজেন না দেয়ায় অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে।
করোনাভাইরাসেআক্রান্তরোগীদের নিরবচ্ছিন্নভাবে অক্সিজেন সুবিধার জন্য ২৯ জুন মঙ্গলবার চালু করা হয়েছে ৬ হাজার লিটারের হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা অক্সিজেন প্লান্ট ।ওই সময় হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, প্রথম অবস্থায় করোনা রেডজোন ও আইসিইউতে হাইফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবে কোনো ওয়ার্ডে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার মাধ্যমে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে না। এমনকি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীরাও এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
কথা হয় রোগীর স্বজন যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামের তুষার আহমেদের সাথে। তিনি জানান, রেডজোনে চিকিৎসাধীন তার শাশুড়ি প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। সেবিকাদের বললেও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কর্মচারীরা মাঝে মাঝে সিলিন্ডারের অক্সিজেন দিচ্ছেন। অক্সিজেন লাগালে স্যাচুরেশন দাঁড়াচ্ছে ৮০। খোলার পর ৭০ এর নিচে। কিন্তু তার রোগীর জন্য হাই ফ্লো অক্সিজেন সুবিধা পাননি। আরেক রোগীর স্বজন শার্শা উপজেলার পাকশিয়া এলাকার হাজের আলী জানান, হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারে দুর্বল। মানুষ বাধ্য হয়ে এখানে থাকছেন। হাই ফ্লো তো দূরের কথা প্রয়োজনের সময় মিলছে না সিলিন্ডার অক্সিজেন। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এক রোগীর স্বজন জানান, তার রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাঝে মাঝে ৬৫ এর নিচে নেমে আসছে। কিন্তু রোগীকে সিলিন্ডারের অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। এর জন্য মাঝে মধ্যে দায়িত্বরত কর্মচারী টাকা দাবি করেন।
গত ১৪ দিনে আইসিইউ, এইচডিইউ ও রডজোন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৩ জন করোনাক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ১ জুলাই ৪ জন, ২ জুলাই ৪ জন, ৩ জুলাই ৭ জন, ৪ জুলাই ৭ জন, ৫ জুলাই ৬ জন, ৬ জুলাই ৬ জন, ৭ জুলাই ৬ জন, ৮ জুলাই ৫ জন, ৯ জুলাই ৭ জন, ১০ জুলাই ১০ জন, ১১ জুলাই ৬ জন, ১২ জুলাই ১২ জন, ১৩ জুলাই ৯ জন ও ১৪ জুলাই ৪ জন মারা যান। এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামানজানান,হাসপাতালের নিজস্বভাবে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা রয়েছে ১৫টি ।
এছাড়াসাজেদাফাউন্ডেশনের দেয়া আরও ৬টি রয়েছে। রোগীদের উচ্চ প্রবাহের অক্সিজেন প্রয়োজন হলে এগুলো ব্যবহার করা হবে। তিনি আরও জানান, হাই ফ্লোতে অনেক অক্সিজেন ব্যয় হয়। যে কারণে বিকল্প ব্যবস্থায় রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে রোগীও ভালো থাকছে আবার অক্সিজেন কম পরিমাণে ব্যয় হচ্ছে। তবে প্রয়োজনের সাথেই রোগীকে হাই ফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
Leave a Reply