যশোর অভয়নগরে বিষপানে আত্নহত্যা করেছে আলেয়া বেগম (৪৬) নামে এক গৃহবধু ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নে বাসুয়াড়ি গ্রামে। তিনি ঐ এলাকার সামাদ মোল্যার স্ত্রী। ২৩ সেপ্টেম্বর এ প্রতিবেদক উপজেলার বাসুয়াড়ি গ্রামে প্রবেশ করলে বেরিয়ে আসে অনেক অজানা তথ্য।নিহত আলেয়া বেগমের স্বামী সামাদ মোল্যাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। গত ১০ সেপ্টেমবার স্ত্রী বিষপানে আত্নহত্যার পর ১২ সেপ্টেম্বর চাকুরীজীবি ছেলে আশরাফুল পিতার জীবন বাঁচাতে ফরিদপুর নিজের কাছে নিয়ে যান। একমাত্র মেয়ে যশোরে থেকে পড়াশুনা করেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এলাকার আদম ব্যবসায়ী গফ্ফার মোল্যার পুত্র নাজমুল মোল্যা (৩৭) নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় আদম ব্যবসা করে।তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, নিহত আলেয়া বেগমের ভাই ইসমাইল বিশ্বাস সৌদি আরবে চাকুরী করেন।এলাকার আদম ব্যবসায়ী নাজমুল মোল্যা সম্প্রতি ৪ জনকে সৌদি আরবে ইসমাইল মোল্যার মাধ্যমে পাঠান।সেখান কাজে যোগদানের কিছুদিন পর চুরি সংক্রান্তের অপরাধে শাহাজান খলিথার পুত্র মোঃ বিল্লাল খলিফা সজল ও মোঃ জিল্লুর পুত্র মোঃ ইমরান হুসাইন দেশে ফিরে আসেন। কয়েকদিন পর আলেয়া বেগমের ভাই ইসমাইল বিশ্বাসের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা না করে নয় লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে বলে বোনকে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ধুরন্ধর আদম ব্যবসায়ী এলাকার নাজমুল মোল্যা,শাহাদত মোল্যা ও চুরি করার অপরাধে ফেরত আসা দুই জন।
৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে স্বামীর উপস্থিতিতে অশ্রাব অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ সন্তানদের জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে চলে আসেন বলে জানান সামাদ মোল্যা।
১০ সেপ্টেম্বর সকালে সামাদ মোল্লার অনুপস্থিতে তার স্ত্রীকে আবারও হুমকি প্রদান করে চলে যান এই সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা । সামাদের স্ত্রী এই অপমানের যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে ঐদিন দুই টার দিকে বিষপান করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আলেয়া বেগম।
নিহতের ভাই ইসমাইল বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমার একমাত্র বোন লেনদেনের বিষয়ে কোন কিছুই জানে না।আমার বোনের মৃত্যুর জন্য এই সঙ্গবদ্ধ চক্রটি দায়ী আমি বিচার চাই। নিহতের ভাই ইকবাল বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, দোষররা যখন আমার বোনকে অশ্লীল অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল সে সময় আমার বোন আমাকে ফোন করেছিল সন্ত্রাসীদের কন্ঠ ফোনে শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু কোন কথাই তারা শোনেনি। আজ আমার বোনের সুখের দিনে আমার একমাত্র বোনকে হারিয়েছি।আমি এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু কোন রকম মেনে নিতে পারছি না।আমি এর বিচার চাই।
নিহতের ভাই চাকই গ্রামের কাদের বিশ্বাস আক্ষেপ করে বলেন, আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।আমাকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় তোমার বোন বিষপান করেছে তাকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আমি দ্রুত সেখানে যাই গিয়ে বোনের কোন সন্ধান মেলেনি। আবারও ফোনে জানতে চাইলে বলেন,ভাটপাড়া। খানেও না পেলে আবারও মোবাইল করলে বলেন,ফুলতলা হাসপাতালে।সেখানে গিয়ে জানতে পারি আমার বোনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রায় ছয়টার দিকে আমার বোনের মৃত্যু লাশ দেখতে পাই। আমি ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই ন্যায় বিচারের জন্য মামলা করবো।
Leave a Reply