সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের অভিযানে স্বনামধন্য গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক, সচিব, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সহ বিভিন্ন পরিচয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ০২(দুই) সদস্য খাগড়াছড়ি হইতে গ্রেফতার।
ঘটনার বিবরণঃ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি দেয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে মোঃ হানিফ ওরফে ডিপজল(৫০) এবং মোঃ শামসুল আলম(৪২) নামের (০২)দুই জন প্রতারককে আটক করেছে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ। একটি স্বনামধন্য সিমেন্ট কোম্পানীতে কর্মরত ডিজিএম পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে ফোন করিয়া নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবং এস.আলম গ্রুপের পরিচালক বলিয়া পরিচয় প্রদান করে। পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তি মামলার ভিকটিমকে দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান এস.আলম গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার পদে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব করে। মামলার ভিকটিম উল্লেখিত পদে চাকরি করিবে বলিলে জনৈক প্রতারক ব্যক্তি তাহাকে ঢাকায় ইন্টারভিউ দিতে হবে বলিয়া জানায়।
পরবর্তীতে উক্ত প্রতারক কৌশলে কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করে নিজেই এস.আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান পরিচয়ে মামলার ভিকটিমের সাথে কথা বলেন। কয়েকদিন পর উক্ত প্রতারক মামলার ভিকটিমের মোবাইলে কল করিয়া এস.আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের মেয়ে ও মেয়ের জামাই এবং দুই জন ইঞ্জিনিয়ারের সাথে বিমানযোগে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বলে। প্রতারক ঢাকায় যাওয়ার জন্য বিমান ভাড়া বাবদ বিমান বাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বার প্রদান করিয়া টাকা বিকাশ করিতে বলিলে মামলার ভিকটিম সরল বিশ্বাসে উক্ত নাম্বারে টাকা বিকাশ করেন।
এর কিছুক্ষণ পর এস.আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মাসুদ সাহেব পরিচয়দানকারী প্রতারক ব্যক্তি মামলার ভিকটিমকে কোম্পানীর জিএম পদের জন্য নির্ধারিত গাড়ি বন্দরে আছে উল্লেখ করিয়া তা ছাড়াতে বিকাশে টাকা প্রদান করিতে বলিলে তিনি বিকাশে টাকা প্রদান করেন। মামলার ভিকটিম বিমান ভাড়া এবং গাড়ি ছাড়ানো বাবদ সর্বমোট ৮০,৭০০/- টাকা বিকাশে প্রদান করেন।
মামালার গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোঃ হানিফ মিয়া ওরফে ডিপজল(৫০) বিভিন্ন সময়ে নিজেকে বিভিন্ন গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক, সচিব, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে লোভনীয় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলিয়া স্বীকার করে।
এ অভিযোগে ভুক্তভোগী গত ২৩/০৩/২০২১ইং তারিখ সিএমপির কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মোঃ হানিফ মিয়া ওরফে ডিপজল(৫০) ও তার সহযোগী মোঃ শামসুল আলম(৪২)’দের অবস্থান শনাক্ত করে। সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের একটি আভিযানিক টিম অদ্য ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে খাগড়াছড়ির দিঘীনালা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এর আগেও গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হানিফ @ ডিপজল কর্তৃক বেঙ্গল গ্রুপের পরিচালক পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ডিএমপির গুলশান থানা কর্তৃক গ্রেফতার হইয়াছে বলিয়া জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদ্বয় সংঘবদ্ধ পেশাদার প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রতারক চক্রটি কৌশলে বাংলাদেশের স্বনামধন্য বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানির কর্মকর্তা না হয়েও কখনো চেয়ারম্যান, কখনো চেয়ারম্যানের মেয়ের জামাতা, কখনো ডিরেক্টর, কখনো এমডি, আবার কখনো বা অবসরপ্রাপ্ত সচিব পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। এরপর প্রলোভন দেখানো সাধারণ মানুষ সহ বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের আরও অধিক বেতনে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে কৌশলে মোবাইল ব্যাংকিং ও নগদে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বলে তারা স্বীকার করে।
গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। উক্ত সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের অন্যান সদস্যদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যহত আছে।
Leave a Reply