বেগুন ভাজা, গুড়া চিংড়ি শুঁটকী ভর্তা, কচুর লতির চরচরির সাথে ঢেঁকি ছাটা চালের ভাত! আহ এতেই তাঁর তৃপ্তি; মধুমতি নদীর পাড়ের কন্যা, তিনি লালন করেন শ্যামল বাংলার শ্যামলা মানুষদের দুঃখ লাঘব করার চিন্তা। তাঁর নিজের চেহারাতেও বাংলার নিভৃত পল্লীর রূপ-রস-গন্ধ মাখানো। তিনি শেখ হাসিনা।
তাঁর দিকে তাকালেই মনে হয় কত যেন আপন তিনি। শেখ হাসিনার কাছে যারা গিয়েছেন তারা স্বীকার করবেন আক্ষরিক অর্থে তিনি কখনো শহুরে নন। সিফন শাড়ি পরিহিত, চোখে দামি সানগ্লাস আর পায়ে বিদেশি হাই হিল পরা একজন শেখ হাসিনাকে কল্পনা করা অসম্ভব। কাছে গেলে মনে হবে তিনি বাড়ির বড় বুবু, ফুফু। এক রাষ্ট্রিয় অনুষ্ঠানে এক বালিকা তো তাঁকে দাদি বলেই সম্বোধন করলো।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী শেখ হাসিনা, তাঁর স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া ও পরিবারকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছিলেন। দিল্লিতে নির্বাসনে থাকার সময় তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন কবিতা শর্মা,।পরে ড. কবিতা শর্মা, দিল্লিস’ সাউথ এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা সপরিবারে তাদের প্রতিবেশী হওয়ার অনেক পরে তারা তার সম্পর্কে জানেন। তিনি শেখ হাসিনাকে কখনো কখনো বাজারে যেতেও দেখেছেন। পরিচয় হয়েছিল অনেক পরে।’ শেখ হাসিনার অনাড়ম্বর জীবনযাত্রা দেখে তারা চমৎকৃত হয়েছিলেন। তাকে প্রায়শ বিষণ্ন দেখলেও তাঁর চোখে মুখে একধরনের দৃঢ়তার ছাপ লক্ষ্য করতেন। ড. শর্মার সেই প্রতিবেশী এখন দিনরাত পরিশ্রম করছেন বাবার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য। বর্তমানে তাঁর সেই দৃঢ়তা শুধু বাড়েই নি বরং তিনি সেই দৃঢ়তাকে দেশের প্রয়োজনে দুঃসাহসে রূপান্তর করতে পিছপা হন না।
পঁচাত্তরে বেঁচে গেলেও আরো অনেকগুলো পঁচাত্তর-সম হত্যাকাণ্ড ঘটানোর প্রবল চেষ্টা শত্রুরা করেছে কিন্তু সফল হয়নি। বাবার অনুসরণীয় পথে হেঁটে হেঁটে তিনি সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদ বধ’ কাব্যের তেজস্বী নারী চরিত্র প্রমিলার মতো যেন শত্রুদের উদ্দেশ্যে বলছেন, ‘আমি কি ডরাই সখি ভিখারি রাঘবে’?
কলমে-Zafar Wazed
Leave a Reply