যশোর সদরে ছেলের সহযোগিতায় লাভলু হত্যা:রহস্য উদঘাটনে ডিবি পুলিশ
যশোর সদরে খোলাডাঙ্গা লাভলু খুনের হত্যা মামলার তদন্তে ২ টি বিদেশী অস্ত্র গুলিসহ ২ যুবককে আটক করে।খুনের রহস্য উদঘাটন করলো যশোর ডিবি পুলিশ।
গত শনিবার ১১ মে খুনের রহস্য উদঘাটনের জন্য যশোর জেলার গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে মাঠে নামে।অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে নিহত লাভলু হোসেন এর ঘর থেকে নিহথ লাভলু হোসের এর ছলে সাকিল হোসেন (১৬) ও তার স্ত্রী সালমাকে আটক করে গভীর থেকে গভীরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে।সাকিল হোসেন ঘটনা আড়াল করতে নানা ফন্দি ফিকির করতে থাকে এবং ডিবি পুলিশকে বিভিন্ন ভূল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে।
এক পর্যায়ে সে তার পিতার লাভলু হোসেন এর হত্যার বিষয়টি (গোপন)করার কথা স্বীকার করে হত্যাকান্ডে জড়িতদের নাম প্রকাশ করে এবং সে হত্যার সময় ও লাশ গুম করার ঘটনাস্থলে হত্যাকারীদের সাথে উপস্থিত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে হত্যার রহস্যর বিস্তারিত বিবরণ দেয়।
তার স্বীকারোক্তি মতে বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে সদু পাগলের পুকুর থেকে ০১ টি বিদেশী পিস্তল গুলি ০২রাউন্ড গুলি ভর্তি অবস্থায় উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।এ ছাড়াও ঘটনা জড়িত প্রধান আসামী কামরুজ্জামান ওরফে খোড়া কামরুলকে ধরতে কঠোরভাবে অভিযান চালায়।এক পর্যায়ে সাকিলের তথ্য মোতাবেক খোড়া কামরুলের সহযোগি ইসরাইল নামের এক যুবকে আটক করে।তার স্বীকারোক্তি মতে,আরও ০১টি বিদেশী পিস্তল উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।পরে হত্যার ঘটনাস্থল খোড়া কামরুলের বসত বাড়িতে অভিযান চালিয়ে খোড়া কামরল ও তার স্ত্রী পলাতক থাকায় যে কক্ষে লাভলুকে হত্যা করা হয়েছে সে কক্ষে তালা খুলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাকিলের তথ্য গভীরভাবে যাচাই বাছাই করে সত্যতা পাওয়া যায়।নিহত লাভলু এর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদেও এক পর্যায়ে হত্যার কারণ উদঘাটন করে ডিবি পুলিশ।

তথ্যানুসন্ধানে সাকিলের তথ্যনুযায়ী জানা যায় কামরুজ্জামান ওরফে খোড়া কামরুল এর সহযোগিদের মাধ্যমে প্রায় দুই মাস আগে স্বর্ণ চোরাকারবারীদের নিকট থেকে অনুমান ৬/৭ কেজি স্বর্ণ ছিনতাই করে।কামরুলের একান্ত সহযোগি লাভলুর ছেলে সাকিল ও স্বর্ণ কবির হাওদারের মাধ্যমে স্বর্ণের বার বিক্রি করে লাভলুসহ একত্রিত হয়ে সপ্তায় বৃহস্পতিবার রাতে ভাগবাটোয়ারা বলে জানা যায়।তারই ধারাবাহিকতার ঐ দিন বৃহস্পতিবার রাতে ভাগবাটোয়ারা করে বলে জানা যায়।ঐ দিন রাতে খোড়া কামরুল কবিরের ডাকে কামরূলের বাড়িতে লাভলু ও তার ছেলে সাকিল হোসেন উপস্থিত হয়।সাকিল ঘরের বাইরে মোবাইলে গেম খেলতে থাকে।পরিকল্পনা অনুযায়ী কামরুল,কবির ও রফিকুল পরস্পরের যুক্তি নিয়ে লাভলুকে নিয়ে ঘরে থাকে।রাত আনুমানিক ১২ টার সময় একটি বিকট গুলির আওয়াজ শুনতে পায়।সাকিল ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলে দেখে তার পিতা ঘরের মেঝেতে লাভলু উলঙ্গ অবস্থায় চিত হয়ে পড়ে আছে।বুক ও নাক দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।সে সময় খোড়া কামরুল তার স্ত্রী বোন ও সঙ্গীয় কবির এবং রফিকুল নিহত লাভলুর ছেলে সাকিলকে শান্তনা দেয়।লাভলুর বুকে গুলি লাগছে এবং ঘটনাস্থলেই মরে গেছে।
সাকিলকে অর্থ ও জীবন জীবিকার লোভ দেখিয়ে হত্যার ঘটনা আড়াল করতে খোড়া কামরুলের স্ত্রী ও বোন মুখে ছেড়া লুঙ্গি গুজে দেয় এবং কামরুলের নির্দেশে কবির ও রফিকুল মটর সাইকেল যোগে খোলাডাজ্ঞা বেলতলা আম বাগানের মধ্যে লাভলুর লাশ গুম করে।আর ঐ সময় সাকিলকে অস্ত্রগুলো দিয়ে গোপন নিরাপদ স্থানে রাখতে বলে।
লাভলু তার ছোট ভাইয়ের হত্যার বাদী হওয়ায় ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য সাকিলকে হত্যাকারী কামরুল পরামর্শ দেয় বলে জানায় সাকিল।
১০ জুন ২০২২ খ্রি: শুক্রবার কোতোয়ালি থানাধীন খোলাডাঙ্গা বেলতলা আমবাগান নামক স্থান থেকে আঃ মান্নানের ছেলে লাভলু হোসেন(৪০) এর লাশ উদ্ধার করে।ঘটনাটি এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যকর হওয়ায় হত্যার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে যশোর ডিবি পুলিশ। উদ্ধারকৃত পৃথক ০২টি অস্ত্র সংক্রান্তে এস আই মফিজুল বাদী হয়ে পৃথক পৃথক এজাহার দায়ের করেন। নিহত লাভলু হোসেন এর পিতা আঃ মান্নান বাদী হয়ে হত্যা মামলা এজাহার দায়ের করেন।
Leave a Reply