শুক্রবার (০৭মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে মুন্সিগঞ্জ শহরের মসজিদ মার্কেট, সুপার মার্কেট, সিটি প্লাজা,আলতাফ প্লাজাসহ ফুটপাত ঘুরে দেখাযায়, গাদাগাদি করে চলছে ইদের কেনাকাটা। মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করে বেচাকিনি করেছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। তবে প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি দেখতে পেলেই মাস্ক পরায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এছাড়া অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বালাই দেখা যায়নি।
মার্কেটগুলোতে নারী ও শিশুদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো।ক্রেতারা বলছেন, গরমের মধ্যে মাস্ক পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে। অস্থিরতা অনুভব হয়। এছাড়া সামনে ইদ, চলছে বিধিনিষেধ। কখন আবার সরকার করোনা পরিস্থিতির কথা বলে পুনরায় শপিংমল বন্ধ করে দেন। এজন্যই আগেভাগে ইদের কেনাকাটা করতে আসছেন তারা।তবে বিক্রেতারা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ের থেকে অনেকটাই কম বেচাকেনা। যারা আসছেন তারা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন। খুব অল্প কয়জন স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করছেন।
যারা অমান্য করছেন তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।পৌর এলাকা থেকে পাঁচ বছর বয়সী ছোট দুই বোন, মামী ও ভাইয়ের সাথে মার্কেটে ইদের কেনাকাটা করতে এসেছেন ইতু ইসলাম। তার মুখে মাস্ক থাকলেও শিশুদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এসময় তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তীব্র গরমের কারণে শিশুরা মুখে মাস্ক রাখতে চায় না। অনেক জোরজবরদস্তি করলে কান্নাকাটি করে। এতে করোনার ঝুঁকি জেনেও তাদের নিয়ে মার্কেটে এসেছি। কেননা গতবছর করোনার কারণে ইদের কেনাকাটা করতে পারিনি। পর পর দু’বছর তো ইদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা যাবেনা শিশুদের।
তাই বাধ্য হয়ে তাদের নিয়ে এসেছি।ভাই ও ভাবিকে নিয়ে মোল্লাকান্দি এলাকা থেকে ইদের কেনকাটা করতে এসেছেন শুভ আহমেদ। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বড় ভাই বিদেশ থেকে এসেছেন। তাই তাদের নিয়ে প্রয়োজনী কিছু কেনাকাটা করছি। তবে যথাসম্ভব স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দ্রুত মেনেই কেনাকাটা করা চেষ্টা করছি।এক ফ্যাশন হাউজের বিক্রেতা তকির আহমেদ বলেন, গরমের কারণে অনেকে মাস্ক পরতে পাড়ছেন না।
কেউ কেউ মার্কেট করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গতকাল এক নারী মাথা ঘুরে আমার দোকানের সামনে পড়ে যায়। পরে পানি ঢাললে জ্ঞান ফিরে। আমরা বার বার ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটা করতে বললেও তারা শুনছেন না। এসময় তকিরের মুখে মাস্ক না থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, একের পর এক কাস্টমার আসতেছে। তাদের সাথে কথা বললে তারা বুঝেন না ঠিকমতো। আর রোজা রেখে বেশি সময় মাস্ক মুখে রাখা অনেক কষ্টের । তাই কিছুক্ষণ আগে মাস্ক খুলেছি।এ বিষয়ে সিভিল সার্জন আবুল কালাম আজাদ বলেন, মানুষের উদাসীনতার কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা থেকে রক্ষা পেতে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। চলতি মাসে করোনা সংক্রমণের সকল রের্কড ভেঙে দিয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারলে সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। জেলার সর্বত্রই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ সময় মাস্ক ছাড়া বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে না। সব ধরনের ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। প্রতিদিন করোনাভাইরাসের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। এতে ভ্যাকসিন দিয়েও সংক্রমণ রোধ করা যাচ্ছে না।বিষয়টিতে জেলা প্রশাসক মো.মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, স্বাস্থ্য বিধি ও সরকারি বিধিনিষেধ মানাতে জেলা প্রশাসনের ছয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন। সরকারি নির্দেশনা শতভাগ কার্যকরে প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply