আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।এই শ্লোগান ও চিন্তা -ভাবনা সবার মধ্যে থাকতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার। বতর্মানে চলতি অর্থ বছরে মাদককে কেন্দ্র করে অনেক সম্ভুমহানী ও খুনের ঘটনার জম্ন হয়েছে যা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ইভটিজিং,সন্ত্রাস,ইয়াবা,ফেনসিডি
মনুষ্য জাতী স্বার্থ হাসিলের জন্য অপহরণ, খুন ,ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ও বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থ করতে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করে বেড়ায় অনায়াসে। ওই মানুষরূপী জানোয়ারগুলো তাদের মেধা অন্য কোনো ভালো কাজে ব্যয় করতো – তাহলে দেশটা অনেক উন্নতি হতো।বোতাম টিপলেই এখন হাতের কাছে অনেক কিছু পাওয়া যায়।মাদকাসক্তদের নারীর প্রতি বিন্দু মাত্র শ্রদ্ধাবোধ নেই। আর খুন ও ধর্ষণের মতো বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডের মূলেই মাদক, তা অনায়াসেই বলা যায়। একজন মানুষ মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না।, অবরূদ্ধ হয়ে যায় বিবেক, ফলে মাদকাসক্ত ব্যক্তির দ্বারা যে কোন ধরণের অপরাধ মুহুর্তের মধ্যেই সংঘটিত হয়ে যায় কোনো অনুশোচনা ছাড়াই। মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে মানবিক বোধ নিস্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে ইচ্ছে মতো ব্যবহার করে এ সমাজের সুবিধাবাদীরা। কণ্যা ঐশী কতৃক তোয়া পুলিশ দম্পতি হত্যা,বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ড, রাজধানী মহম্মদপুরে মডেল তাবাসসুম আদৃতাকে ইয়াবা সেবনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র আশীষ কর্মকার (২৬) ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নিজের প্রেমিকাকে। কয়েকজন তরুণ এক হলেই তাদের আড্ডায় বিষয় বস্তু হয় নারীর শরীর ও হিন্দি – ইংরেজি ছবির সেক্সচুয়াল দৃশ্য। বর্তমানে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ তরূণেরা আজ সিগারেট, গাজা, বাবা (ইয়াবা) ও অন্যান্য নেশায় অনেকে।আবার টাইগার স্পিড ও অন্যান্য পানীয়ের সাথে ‘নকটিন’ট্যাবলেট মিশিয়ে ভালোভাবে তা ঝাঁকিয়ে পান করে থাকে আর এটাকে ওদের ভাষায় বলা হয় “ঝাঁকি “।ডেক্সপোটেন,অফকফ,প্রডেক্স,ও আ্যন্টিটাসিড পিপারকেও ফেনসিডিলের বিকল্প হিসেবে সেবন করতে দেখা যায়। প্রাথমিক,মাধ্যমিক ও ঢাকা ইউনিভার্সিটির একাধিক ছাত্রী ধর্ষণসহ সারাদেশে বহু ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামীরা মাদকাসক্তে ছিল মর্মে প্রকাশিত সংবাদ ও পুলিশের মাধ্যমে জানা যায়। শুধু হত্যাকাণ্ড ধর্ষণ নয়, চুরি ছিনতাই ও পারিবারিক অশান্তি সহ বহু অপরাধের মুলে রয়েছে এ মাদক।
দেশব্যাপী মাদকের প্রভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তরূণ- তরূণীরা মাদকের প্রতি বেশি আসক্ত হলেও শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষই মরণঘাতি মাদক গ্রহণ করছে।মদ্য পান করে মাতলামী করতেও লক্ষ্য করা গেছে।এমনকি স্ত্রীকেও মারপিটের ঘটনা ঘটছে অহরহ।
সরকারী-বেসরকারী উদ্যেগসহ সামাজিকভাবে মাদকের ভয়াবহতা এবং পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করলেও কমছেনা মাদকসেবীর সংখ্যা।মাদক ব্যবসায়ীরা বহু সম্পদের মালিক হওয়ার নেশায় সারা দেশে মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে। কারণ এটি একটি লাভজনক ব্যবসা।অল্প দিনেই বনে যাওয়া যায়। রাঘব বোয়ালরা সব সময় থাকেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসন হানা দিলে বলেন আংগা লোক ছেড়ে দিন।
মাদকের ভয়াবহতা পরিস্থিতির কথা বুঝতে ও জানতে না পারায় কিশোর -কিশোরী বন্ধুদের আড্ডায় বিক্রেতাদের ফাঁদে পা দিয়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।মাদকের প্রভাবে একজন মানুষ সহজে হিতাহিত জ্ঞান শুন্য হয়ে পড়ে।কোনটা
ভালো, কোনটা মন্দ,কোন কাজ করা উচিত, কোন কাজ করা ঠিক নয় সে বিষয়ে জ্ঞানহীন হয়ে পড়ে মাদকসেবীরা। ফলে সমাজের নানা ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাইরে থেকে মরণঘাতি নেশা মাদক সেবন করে স্ত্রীর উপর শারীরিক ও পাশ্ববিক নির্যাতনের অভিযোগের অন্ত নেই। চলতি অর্থ বছরে প্রায় শতাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে মাদক সংক্রান্ত নিয়ে।সম্প্রতি যশোর মনিরামপুরে মাদকের টাকা পিতা দিতে অস্বীকার করলে পিতা – মাতাকে বেধড়ক মারপিটসহ বসত ভিটায় অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে।পারিবারিক কলহ হাজার হাজার তৈরী হচ্ছে প্রতিদিন।চিহ্নিত অপরাধীরা মাদকদের ব্যবহার করে তাদের উদ্দেশ্য সহজেই জড়িয়ে পড়ে মাদকসেবীরা।
মাদকাসক্তরা মাদকদ্রব্য কেনার জন্য মা-বাবা এবং পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা চেয়ে না পেলে তারা যে কোন কাজ করতে কুন্ঠাবোধ করে না। অনেক সন্তান পিতা,মাতা ও স্ত্রীকেও হত্যা করতে দ্বীধাবোধ করে না। বেঁচে থাকলে স্বাক্ষী।যার কারণে হত্যা করে অনেকেই পার পেয়ে যায়।
সব অপরাধের মূলে মাদক,এ সত্যটিকে সামনে রেখে মাদক ব্যবসায়ীদের মতো মাদকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা মাদকাসক্তদের প্রয়োজনে আইনের আওতায় এনে এবং মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে পাঠিয়ে সুস্থ -সুন্দর -স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসার ব্যবস্থা করার কোন বিকল্প নেই। অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার চেয়ে যাতে অপরাধ সংঘটিত না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করাই উত্তম। বিজ্ঞমহল আক্ষেপ করে বলেছেন,সীমান্তে অভিযান জোরদার করতে হবে। আইন প্রয়োগকারীর ভিতর কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা রয়েছেন তাদেরও ভালো হতে হবে।
অপরাধের মূলে হাত দিতে হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, তাহলে কমে যাবে ইভটিজিং,খুন-ধর্ষণ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
Leave a Reply