ফরিদপুরের সালথায় বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণে ২২ বছরের এক তরুণী অন্তঃসত্ত্বার ও দুই লাখ টাকায় মিমাংসার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ধর্ষক ফেলা মাতুব্বরকে প্রধান আসামী করে ১০ জনের নামে এ মামলা দায়ের করেছেন অন্তঃসত্ত্বা ওই তরুনী। এ ঘটনায় মনোয়ার হোসেন নান্নু নামে এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, অন্তঃসত্ত¡া ওই তরুনীর বাবা-মা মারা যাওয়ার পর গত ৫-৬ বছর ধরে তিনি উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়া গ্রামে তার বোনের বাড়িতে থাকতেন। সেখানে থাকাকালীন প্রতিবেশী ফেলা মাতুব্বরের সাথে তার প্রেম সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিয়ে প্রলোভনে তার সাথে একাধিকবার সেক্স করে ফেলা। এতে ওই তরুনী অন্তঃসত্ত¡া হলে ধর্ষক ফেলা কয়েক মাস আগে বিদেশে চলে যায়। বর্তমানে ওই তরুনী ৭/৮মাসের অন্তঃসত্ত¡া বলে জানা গেছে। মেডিকেল পরীক্ষার পরে বাকিটা জানা যাবে।
তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি স্থানীয় মাতুব্বররা টাকার বিনিময় মিমাংসা করে দেয়। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়ার পর আমরা ঘটনা তদন্তে মাঠে নামি ও অন্তসত্ত¡া তরুনীকে উদ্ধার করি। এ ঘটনায় গত (৩মে) সোমবার রাতে ধর্ষক ফেলা মাতুব্বরকে প্রধান আসামী করে ১০ জনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে অন্তঃসত্ত¡া ওই তরুনী। মামলায় মাতুব্বরদেরকেও আসামী করা হয়েছে।
অন্তঃসত্ত¡া ওই তরুনী দাবী করে বলেন, আমি আমার সন্তানের স্বীকৃতি চাই। আর যারা আমার এই ঘটনাটি জোর করে মিমাংসা করে দিয়েছিল, তাদের বিচার চাই।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সালথা-নগরকান্দা সার্কেল) মোঃ সমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে জানার পর ওই তরুনী উদ্ধার করে মামলা নিয়েছি। জঘন্যতম এই ঘটনাটি মিমাংস করে থামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকারীদের মধ্যে মনোয়ার হোসেন নান্নু নামে একজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি সালথায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ২০ বছরের এক তরুনীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ফেলা মাতুব্বর নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ওই তরুনী এখন ৮ মাসের অন্তঃসত্বা। ঘটনাটি মাত্র ২ লাখ টাকায় মিমাংসা করে তরুণীর গর্ভে থাকা সন্তানকে নষ্ট করে ফেলানোর সিদ্ধান্ত দেয় স্থানীয় কতিপয় মাতুব্বর ও সমাজপতিরা। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ধর্ষিত তরুনীকে উদ্ধার করে তার গর্ভের সন্তানকে বাঁচানোর জোর দাবী জানান সচেতন মহল। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ-প্রশাসনের নজরে আসে বিষয়টি।
Leave a Reply