ঘটনার বিবরণ জানা যায়-
নকল স্বর্ণের বার দেখিয়ে প্রতারণাপূর্বক আসল স্বর্ণ ও নগদ টাকা আত্মসাতের অপরাধে ০৩ জন প্রতারক গ্রেফতার। আসামীরা প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা ০৩টি রিক্সাযোগে এই ধরনের প্রতারণা কার্যক্রম করে। তাদের ০৩টি রিক্সা একই পথে চলে। তারা মহিলাদেরকে টার্গেট করে স্বর্ণের বার পাওয়ার লোভ দেখায়। ০২টি রিক্সা সামনে থাকে এবং পিছনের রিক্সায় মহিলাদেরকে তুলে যাত্রী হিসেবে গন্তব্য পথে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সামনে থাকা রিক্সাগুলোর মধ্যে একটি রিক্সার ড্রাইভার কাগজে পেচানো ০১টি স্বর্ণের বার সাদৃশ্য বস্তু রাস্তায় ফেলে চলে যায়। যাত্রীসহ থাকা পিছনের রিক্সাটির ড্রাইভার সামনে এসে উক্ত কাগজ পেচানো স্বর্ণের বার সাদৃশ্য বস্তুটি পেয়ে নিজের কাছে নিয়ে নেয়। কিছুদূর গিয়ে তার রিক্সা নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে সামনে থাকা তাদের গ্রুপের আরেকটি রিক্সার ড্রাইভারকে ডাক দিয়ে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য রিক্সা ঠিক করে দেয়। যাত্রীরা রিক্সায় উঠার সাথে সাথে পূর্বের রিক্সার ড্রাইভার মহিলা যাত্রীদেরকে কাগজ পেচানো স্বর্ণের বার সাদৃশ্য বস্তুটি দেখিয়ে বলে, “আমি গরিব মানুষ এত ওজনের স্বর্ণ দিয়ে কি করব, দিদি আপনারা এটা কিছু টাকা পয়সা দিয়ে নিয়ে নেন বা আপনাদের কাছে যে স্বর্ণালংকার আছে সেগুলো আর কিছু টাকা-পয়সা দিয়ে আপনারা এই স্বর্ণের বারটি রেখে দেন।” রিক্সার ড্রাইভার মহিলা যাত্রীদেরকে লোভ দেখিয়ে মহিলাদের কাছে থাকা গলার চেইন, আংটি ও নগদ টাকা নিয়ে নকল স্বর্ণের বারটি দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে রিক্সার ড্রাইভার যাত্রীদেরকে গন্তব্যস্থলে পৌছে দিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয় এবং মূহূর্তের মধ্যে রিক্সা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। তারা সকলেই হাজারী গলি গিয়ে স্বর্ণালংকারসমূহ বিক্রয় করে যে টাকা পায় সে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে নেয়। হাজারী গলিস্থ স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী কমমূল্যে উক্ত স্বর্ণালংকারসমূহ ক্রয় করে নেয়। আসামীরা দীর্ঘ ৭/৮ বছর যাবৎ এই ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম করে আসছে।
ঘটনার বিবরণে আরো জানা যায়-
জনৈকা শুক্লা দে ও তাহার সঙ্গীয় গোপী বিশ্বাস (৪০) দামপাড়া ওয়াসা মোড়স্থ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্যকর্মী। তারা দুইজন ইং ২৯/০৪/২০২১ তারিখ বেলা অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার সময় কোতোয়ালী মোড় হইতে ১নং আসামী মোঃ জালাল মিয়া (২৮) এর চালিত রিক্সা ৭০/- টাকায় ভাড়া করে চকবাজার থানাধীন গোল পাহাড় মোড়স্থ ডাচ বাংলা ব্যাংকের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। পথিমধ্যে সিডিএ বিল্ডিং এর গেইটের একটু সামনে পৌঁছামাত্র ১নং আসামী তার চালিত রিক্সার সামনের চাকার সামনে রাস্তার উপর হতে প্যাকেটে মোড়ানো একটি স্বর্ণের বার পেয়ে পকেটে নিয়ে নেয়। তখন শুক্লা দে ও তার সহকর্মী গোপী বিশ্বাস (৪০) উভয়ে উক্ত স্বর্ণের বারটি কার পড়ে গেছে বলে দুঃখ প্রকাশ সহ একে অপরের মধ্যে বলাবলি করতে থাকে। ইং ২৯/০৪/২০২১ তারিখ বেলা অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় কোতোয়ালী থানাধীন নন্দনকানন ডিসি হিলস্থ বন সংরক্ষণ কার্যালয়ের গেইটে সামনে পাকা রাস্তার উপর রিক্সাটি পৌছাইলে ১নং আসামী তার রিক্সার চেইন নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে শুক্লা দে ও তাহার সঙ্গীয় গোপী বিশ্বাস কে তাদের পিছনে থাকা ২নং আসামীর চালিত রিক্সা ঠিক করিয়া দেয়। রিক্সা ঠিক করে দেওয়ার সময় ১ ও ২নং আসামীদ্বয় বলে যে, আমরা গরিব মানুষ এত ওজনের স্বর্ণ দিয়ে কি করিব, দিদি আমাদের কিছু টাকা-পয়সা অথবা স্বর্ণালংকার দিয়ে আপনারা এই স্বর্ণের বারটি রেখে দেন। জনৈকা শুক্লা দে সরল বিশ্বাসে তাদের কথায় রাজি হয়ে তাদের সাথে থাকা ০১ জোড়া ০৩ আনা ওজনের কানের দুল, ০১টি ০৪ আনা ওজনের আংটি, ও নগদ ৪০০/- (চারশত) টাকা দিয়ে উক্ত স্বর্ণের প্যাকেট করা স্বর্ণের বারটি নিয়ে নেয়। ঐ সময় ১নং আসামী তার নিকট হতে ৭০/- টাকা ভাড়ার মধ্যে ২০/- টাকা নেয়। ১নং আসামীর ঠিক করে দেওয়া ২নং আসামীর রিক্সা যোগে কোতোয়ালী থানাধীন মোমিন রোডস্থ সাহাবুদ্দিন ডেকোরেটর্স নামীয় দোকানের সামনে রাস্তার উপর পৌছাইলে ২নং আসামীও তার রিক্সার চেইন নষ্ট হয়ে গিয়াছে বলে তাদেরকে রিক্সা হইতে নামিয়ে দেয়। অনেক মিনতি করার ফলে রিক্সা ভাড়া বাবদ ৫০/- টাকা প্রদান করে রিক্সা হতে নামার সাথে সাথে চোখের পলকের মধ্যে ২নং আসামী তার রিক্সা নিয়া অজ্ঞাতস্থানে উধাও হয়ে যায়। ১ ও ২নং আসামীর আচরণ সন্দেহ হলে তারা অন্য একটি রিক্সা নিয়ে পুনরায় একই পথে কোতোয়ালী থানাধীন নন্দন কানন ডিসি হিল বন সংরক্ষণ কার্যালয়ের সামনে ১নং আসামীকে দেখতে পেয়ে তাকে তাদের দেওয়া স্বর্ণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে এলোমেলো কথাবর্তা বলতে থাকে। অতঃপর ১নং আসামীর আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় উল্লেখিত স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ফেরত চাইলে ১নং আসামী বিভিন্নভাবে চলচাতুরী করে স্বর্ণ গুলো এনে দেওয়ার কথা বলে রিক্সা নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। আসামীদ্বয় পরস্পর যোগসাজশে নকল স্বর্ণের বার দেখিয়ে খাঁটি স্বর্ণ ও নগদ টাকা প্রতারণা পূর্বক আত্মসাৎ করিয়াছে। পরবর্তীতে জনৈকা শুক্লা দে ইং ৩০/০৪/২০২১ তারিখ বিকাল অনুমান ০৩.০০ ঘটিকার সময় ১ ও ২নং আসামীদ্বয়কে সিনেমা প্যালেস মোড়ে দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে এসআই/মোঃ মোমিনুল হাসান সঙ্গীয় অফিসার সহ উক্ত স্থানে গিয়ে ১ ও ২নং আসামীদ্বয়কে আটক করে। ধৃত ১ ও ২নং আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের নাম ঠিকানা প্রকাশ সহ উপরোক্ত ঘটনার কথা স্বীকার করে। ১ ও ২নং আসামীদ্বয়ের হেফাজত হতে ০১টি রিক্সা ও ০১টি মোটরসাইকেল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। অতঃপর ১ ও ২নং আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ৩নং আসামীর হেফাজত হতে উল্লেখিত স্বর্ণালংকার উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। ধৃত ১ ও ২নং আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে তারা উক্ত স্বর্ণালংকার ৩নং আসামীর কাছে বিক্রয় করেছে বলে জানায়। তাদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক ইং ৩০/০৪/২০২১ তারিখ বিকাল ০৫.৩০ ঘটিকার সময় কোতোয়ালী থানাধীন হাজারী লেইনস্থ মনিরাজ জুয়েলার্স নামক দোকান হইতে উক্ত দোকানের মালিক তথা ৩নং আসামীকে আটক করিয়া তাহার হেফাজত হইতে গলিত স্বর্ণ উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। ধৃত ৩নং আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে তার নাম ঠিকানা প্রকাশ সহ ১ ও ২নং আসামীদ্বয়ের কাছ থেকে উল্লেখিত স্বর্ণালংকার ক্রয় বিক্রয়ের কথা স্বীকার করে। জনৈকা শুক্লা দে আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করল
Leave a Reply