দেশের থেকে যে কেউ প্রশ্ন করতেই পারে কিন্তুু উত্তর দিতে ‘ অসম্ভব’। যেখানে দেশের প্রতিটি স্তরে অনিয়ম,দুর্নীতি আর অত্যাচারের দাবানলে দেশ ছেয়ে গিয়েছিল সেখানে উত্তরটি স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে হতো। অনেকেই অত্যাচারের শিকার হয়ে নিজ জন্মভূমি ত্যাগ করে ভারতে পাড়ি জমিয়েছে। কিন্তু এই অসম্ভবকে যে সম্ভবে পরিণত হবে তা ভাবেনি অত্যাচারীরা আর যারা অত্যাচারিত হয়েছে। এ দেশে অত্যাচারীর সংখ্যা বেশি না হলেও অত্যাচারিত হয়নি এমন লোকের পরিমাণ খুঁজে পাওয়া দায়।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ক্ষমতার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েই প্রথমে শরু করেন দুর্নিতীর বিরুদ্ধে অভিযান। সেই অভিযানের ফলে বড় বড় আমলা, বুর্জোয়াগং ধরা পড়েছিল সেই সঙ্গে এদেশের অনেক বড় বড় রাঘব বোয়ালরা। যারা অবৈধভাবে ও দুর্নীতি করে অর্থের পাহাড় গড়েছিল সেই পাহাড় বতর্মান সময়ে আজ প্রায় ধ্বংসের পথে। সরকারি অফিসগুলো এখন একটু তুলনামূলক দুর্নীতি কমলেও আদালত পাড়ায় জেলা সদরের বিআরটিএ অফিসে এখনো পর্যন্ত এ অভিযানে সুফল বয়ে আনতে পারেনি।
কতিপয় থানা ও পুলিশ ফাঁড়িগুলোর অবস্থা একই। হয়রানির শিকার হচ্ছে আগের মতোই। সরকারি অফিসগুলোতে সম্পর্কে যুগে যুগে যে কথাটি প্রচলিত হয়ে আসছিল তা হলো অর্থ না দিলে ফাইল আলমারিতে বন্দি হয়ে থাকত। আবার অর্থ ধরিয়ে দিলেই আলমারি থেকে ফাইল খোলা হতো। দুর্নিতী দমন অভিযান এই বহুল প্রচলিত মতবাদকে কিছুটা হলেও নাড়া দিয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে জাতীয় বোর্ডসহ বিভিন্ন ভূমি ইউনিয়নের ভূমি অফিসগুলোতে যে ঘুষ বানিজ্য বহাল তবিয়তে চলতো সেগুলোর দিকে লক্ষ্য করে দেখা গেছে, নামজারির ক্ষেত্রে সামান্য পরিবর্তন। বর্তমানে যে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে তা কিছুটা চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে বিজ্ঞ জনেরা বলেছেন, সরকারি প্রতিটি সেক্টরে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনলে দুর্নিতী দমন সম্ভব ।
দুর্নিতী দমন কমিশন সুত্রে অবশ্য বলা হয়েছে রাতারাতি দুর্নীতি বন্ধ করার কোন যাদুর কাঠি তাদের হাতে নেই। তবে দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের ধরার পর মাঝারি ও পরবর্তীতে চুনোপুটিদের ধরা হবে। তবে নির্ভরযোগ্য সুত্র বলছে, ইতিমধ্যে কয়েক হাজার দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা – কর্মচারীর নাম দুর্নীতি দমন সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্থা তালিকাভূক্ত করেছে। দুর্নীতিবাজ যেই হোক তার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার, যাতে দুর্নীতি করতে সবাই ভয় পায়। শতভাগ উচ্ছেদ না হলেও সহনীয় পর্যায় আনতে সরকার বদ্ধ পরিকর এবং শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের তালিকার প্রথম সারিতে যাতে না থাকে সে উদ্দেশ্যেই বতর্মান সরকার শুরুতে যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তা নিশ্চিত করতে দুদক ও টাস্কফোর্সকে আরো দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হবে। আর তা সম্ভব হলেই সৃষ্ঠি হবে সরকারের নতুন ইতিহাস।
Leave a Reply