কোথাও সাংবাদিক নির্যাতন, হামলা-মামলার ঘটনায় স্থানীয় প্রতি ১০ জনের ৩জন সরাসরি অপরাধীর পক্ষাবলম্বন করে থাকেন। আর ওই ৩জনই রাক্ষুসে সাংবাদিক। একজন সাংবাদিককে ফাঁসাতে রাক্ষুসেরা তাৎক্ষনিক কোমড় বেঁধে মাঠে নেমে পড়েন। ওখানকার বাকি ৭জন সাংবাদিককে নানাভাবে ভুল বুঝিয়ে ঘটনা প্রতিষ্ঠিত করতে জানপ্রান উজার করে দিতে পেঁছপা হন না। এদেরকে চিহ্নিত করাও সময়ের দাবি।
যেমনটি লালমনিরহাটের সাংবাদিক জাহাংগীর আলম শাহিনের ঘটনায়ও তা ব্যত্যয় ঘটেনি। ওখানকার সাংবাদিকদের ফেসবুক, ফোনালাপ, ম্যাসেঞ্জার দেখলেই তা সহজেই অনুমেয় হবেন। কতটা উৎসাহী ছিলেন রাক্ষুসে সাংবাদিকরা। খোদ আমাকেই তাদের পক্ষের ক’জন ফোনে শাহিনের বিরুদ্ধে নানামূখী কথা বলে আমাদের অবস্থান থেকে সরাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিএমএসএফ একটা ইথিকসে কাজ করে। সেটি শতভাগ বিপদগ্রস্ত সাংবাদিকের পাশে থাকা। আমরা তেমনটি পাশে থেকে প্রতিবাদ -প্রতিরোধে এগিয়ে থাকি।
তবে মূলকথা হলো; ঐ ক্যাম্প কমান্ডার আনোয়ার আগ থেকেই শাহিনের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। যেটি শাহিনের ফেসবুক ওয়ালে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। ধরলা নদীর মাটি কেটে বাংলাদেশের মানচিত্র ভেঙ্গে ভারতে চর জাগছে শাহিন এ বিষয়ে অগনিত প্রতিবেদন করেছিলেন। সম্প্রতি ঐ মাটি ও বালু খেকোদের দৌরাত্মের খবর সোর্সের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে কলেজের এক সহকর্মীকে নিয়ে রাতের আঁধারে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলের ভিডিও-চিত্রধারণ করে ফিরছিলেন।
পথিমধ্যে দেখা মেলে ওই জমদূত ক্যাম্প ইনচার্জ আনোয়ারের সাথে। এই আনোয়ারের অনিয়মের তথ্য উধর্বতন অফিসারের কাছে একসময়ে জানিয়েছিল শাহিন। ফলে তাকে ভৎসনা করেছিল উপরস্থ অফিসার। ঐদিনের ক্ষোভের জ্বাল মেটাতে লকডাউনের জালে রাত ৯টার দিকে পথিমধ্যে আটকা পড়ে গেলেন শিক্ষক -সাংবাদিক জাহাংগীর আলম শাহিন। তাৎক্ষনিক কমান্ডার আনোয়ার বিষয়টি স্থানীয় দু’জন রাক্ষুসে সাংবাদিককে ফোনে সমর্থন নিয়ে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে রাস্তায় শাহিনের হাতে- কোমড়ে দড়ি বেঁধে ফেলে পকেটে একবোতল ফেনসিডিল ঢুকিয়ে দূর্বল করে ফেলেন। সাথে থাকা অপর কলেজ সহকর্মীকেও দূর্বল করতে তাকেও টুকটাক মারধর করা হয়।
গভীর রাত অবধি রাস্তায়-গাড়িতে নির্মম-নির্যাতন চালিয়ে তাকে নিয়ে আসা হয় থানায়। সেখানে আহতবস্থায় পূরোঘটনা পুলিশ-সাংবাদিকদের সামনে ভিডিওচিত্রে তুলে ধরেন শাহিন। থানায় একবোতল ফেনসিডিল, হাতকড়া, কোমড়ে ও হাতে দড়ি বাঁধাবস্থায় ফটোশেসনে বাধ্য করেন বিজিবি।
গতকাল সাংবাদিক শাহিনের সাথে বিজিবিকান্ডে হতবাক হয়ে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের আইডি থেকে মাদকদ্রব্যসহ আটককৃতদের ছবি চাওয়া হয়। তাতে দেশের প্রায় দুই শতাধিক থানার মাদকদ্রব্যসহ ছবি পাওয়া যায়। তাতে লক্ষ, কোটি টাকার মাদক উদ্বার হলেও কোন আসামিকে দড়ি বেঁধে ফটোশেসনে দেখা যায়নি। এতে গোটা বাংলাদেশের সাংবাদিকরা স্তব্ধ, লজ্জ্বিত, ক্ষুব্ধ, রাগান্বিত। তাই ১৬ এপ্রিল দিনটাকে সাংবাদিকদের লজ্জা দিবস হিসেবে আমরা ঘোষণা করতে চাই।
খোদ বাংলাদেশ সরকারের গণমাধ্যম বাসস এবং প্রথম সারির জাতীয় দৈনিক জনকন্ঠের জেলা প্রতিনিধি ও একটি এমপিওভুক্ত কলেজের প্রভাষকের সাথে এরুপ আচরণে পুরোঘটনা সাজানো তা বোঝার একটুও বাকি রইলোনা।
তাই সরকারের বিশ্বস্থ সংস্থা বিজিবির ভাবমূর্তি ও সাংবাদিকদের ইজ্জ্বত রক্ষায় পুরো ঘটনাটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত এখন সময়ের দাবি।
লেখক: আহমেদ আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম- বিএমএসএফ ও সমন্বয়কারি, সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাংলাদেশ।
Leave a Reply