চকরিয়ার বৃহৎ সমবায় সমিতি চিরিঙ্গা ইউনিয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের নির্বাচনে চরম অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন সভাপতি প্রার্থী কাউন্সিলার মুজিবুল হক। মোটা অঙ্কের বিনিময় ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি তাকে সভাপতি পদে হারানো হয়েছে। তিনি এধরণের প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে দ্রুত পুন: নির্বাচনের দাবী জানান তিনি। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবী তুলে ধরেন সভাপতি মুজিবুল হক। এদিকে চিরিঙ্গা ইউনিয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির নির্বাচন বাতিলের দাবীতে সমিতির কার্যালয়ের সামনে সভাপতি প্রার্থী মুজিবুল হকের সমর্থক ও সদস্যরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
তারা প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবী জানান। সভাপতি প্রার্থী পৌর কাউন্সিলর মুজিবুল হক দাবি করেন, ঘোষিত ফলাফল তালিকায় সহ-সভাপতি পদে বিজয়ী প্রার্থী মৌলভী জাফর আলম মাছ প্রতীকে পেয়েছেন ২১০ ভোট। একইপদে নিকতটম প্রার্থী আক্তার আহমদ বাই সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২০৪ ভোট। ফলাফল তালিকায় দুইজনের প্রয়োগকৃত ভোটের সংখ্যা সর্বমোট ৪১৪ ভোট দেখানো হয়েছে। একইভাবে ফলাফল তালিকায় সভাপতি পদে বিজয়ী নুরুল আলম খেজুর গাছ প্রতীকে ১২৮ ভোট পেয়েছেন। নিকটতম প্রার্থী তিনি (অভিযোগকারী) মুজিবুল হক দোয়াত কলম প্রতীকে ১২৬ ভোট, অপর দুই প্রার্থী যথাক্রমে জমির উদ্দিন ছাতা প্রতীকে ৮৬ ভোট ও ডা.আনন্দ মোহন দে চেয়ার প্রতীকে ৬৫ ভোট পেয়েছেন বলে ফলাফল ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচন কমিটি।
সেই হিসেবে সভাপতি পদে চারজনের প্রয়োগকৃত ভোটের সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছে ৪০৫ ভোট। সভাপতি প্রার্থী মুজিবুল হকের প্রশ্ন, সহ-সভাপতি পদে (বিজয়ী ও বিজিত প্রার্থী) দুইজনের প্রয়োগকৃত ভোটের সংখ্যা ৪১৪ দেখানো হলেও সভাপতি পদে চারজন প্রার্থীর প্রয়োগকৃত ভোট দেখানো হয়েছে ৪০৫ ভোট। অর্থাৎ সভাপতি ও সহ-সভাপতি দুইটি পদে প্রয়োগকৃত ভোটের তারতম্য রয়েছে আরো ৯ ভোট। ফলাফল সীটে অবশ্য নির্বাচন কমিশন ওই ৯টি ভোট কোথায় আছে হদিস দিতে পারেনি। সভাপতি প্রার্থী মুজিবুল হক অভিযোগ তুলেছেন, ফলাফল তালিকায় সন্ধ্যান না থাকায়া প্রয়োগকৃত ওই ৯টি ভোট কারচুপির মাধ্যমে তাকে পরাজিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই ৯টি ভোট তিনি পেয়েছেন এবং তিনিই সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন।
তিনি নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, প্রয়োগকৃত ওই ৯টি ভোটের হদিস দিতে হবে। নইলে কারচুপির এই ফলাফল বাতিল করে সভাপতি পদে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে তিনি আইন আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান। একইসঙ্গে তিনি কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা করা ব্যালটসহ ভোটের বাক্স সমুহ উপজেলা প্রশাসনের কাছে জব্দ করার জন্য চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানান। সমিতির নিবার্চন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবী করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি সেলিম উল্লাহ। তিনি জানান, ঘোষিত ফলাফল তালিকায় সামান্য ত্রুটি হয়েছে। ফলাফল নিয়ে কারও অভিযোগ থাকলে সমবায় আইনে আপীল করতে পারেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, চিরিঙ্গা বহুমুখী সমবায় সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকে শুনেছি। এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমার দপ্তর কিংবা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার কাছ থেকে কোন ধরণের অনুমতিও নেয়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনে যদি কোনধরণের অনিয়ম বা কারচুপির ঘটনা ঘটে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply