করোনা পরিস্থিতির কারণে বন্ধ রয়েছে সকল সরকারি, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এতে মহা বিপাকে পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ডেকোরেটর, লাইটিং ও মাইক ব্যবসায়ীরা। করোনাভাইরাসের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে বিগত দুই বছর ব্যবসায়ীরা কোন ব্যবসা করতে পারেননি। এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সকলেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। থেমে থেমে লকডাউনের কারণে কোন কাজ কর্ম নেই এ পেশায় জড়িতদের। তাই ডেকোরেটর ব্যবসা সংশ্লিষ্ট পরিবারে চলছে নিরব দূর্ভিক্ষ। থমকে গেছে তাদের জীবন-জীবিকা।
অন্যসব ব্যবসায়ীদের মত বিপাকে পড়েছেন ডেকোরেটর মালিকরাও। অনেক ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রণোদনা পেলেও এ উপজেলার ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা পায়নি সরকারি প্রণোদনা। জানা গেছে উপজেলায় ৩শ’ জন ডেকোরেটর, লাইটিং ও মাইক ব্যবসায়ী রয়েছে। এসব ব্যবসার সাথে বাবুর্চি, ভিডিও ম্যান, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ ৫হাজার শ্রমিক জড়িত এ পেশায়। করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের সকল প্রকার ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডেকোরেটরের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে দীর্ঘদিন ডেকোরেটরের পণ্য ভাড়া না থাকায় ব্যবসায়ীরা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। এ অবস্থায় প্রতিদিন দোকানে পড়ে থাকা বিভিন্ন কাঠের পণ্য সামগ্রী নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘর ভাড়া কর্মচারীর বেতন পরিশোধে বিপাকে পড়েছেন মালিকেরা। অনেক শ্রমিক তাদের দীর্ঘদিনের পেশা ছেড়েছেন। কেউ এখন চা বিক্রেতা, কেউ ফল বিক্রেতা, কেউবা রাজমিস্ত্রি সরকারি। ডেকোরেটর ব্যবসার সাথে জড়িত শ্রমিকদের কাজ না থাকায় এসব শ্রমিকদের পরিবারে চলছে চরম দুর্দিন।
সিরাজদিখান বাজারের দৌলত ডেকোরেটরের স্বত্বাধিকারী দৌলত ব্যাপারী জানান, সিরাজদিখান উপজেলার ডেকোরেটর মালিকদের সমিতি না থাকায় সরকারের কাছে আমরা প্রণোদনার দাবি করতে পারছিনা। আমাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ এই ব্যবসা। দীর্ঘদিন আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটে পড়েছেন আমার মত অনেকেই। ফলে এসব পরিবারের লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলার তাওহীদ ডেকোরেটর এন্ড লাইটিং এর স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন হৃদয় জানান, লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ ছিল। ঠিকমতো দোকান ভাড়া দিতে না পারায়, দোকান ছেড়ে দিতে হয়েছে। গুদামে মাল রেখে রাস্তার পাশে ফল বিক্রি করে গুদাম ভাড়া দিতে হচ্ছে।
ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋন করে চলতে হচ্ছে। ইছাপুরা চৌরাস্তার অভি ডেকোরেটরের স্বত্বাধিকারী আবদুল জব্বার হাওলাদার বলেন, এই ব্যবসা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন বিধি নিষেধ ও লকডাউনের কারণে এই ব্যবসা এখন অচল হয়ে পড়েছে। মালিক ও শ্রমিকরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই ঘর ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল না দিতে পেরে এ ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে।
Leave a Reply