কোনো বিলম্ব ছাড়াই ঢাকাসহ পাঁচ জেলার অবৈধ ইটভাটার সব ধরনের স্থাপনাসহ নির্মাণসামগ্রী ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন উচ্চ আদালত। এদিকে আদালতের আদেশের কপি পেয়েছেন জানিয়ে শিগগিরই অ্যাকশনে নামবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা। রিটকারী আইনজীবী জানিয়েছেন, হাইকোর্টের আদেশের অনুলিপি পেয়েছি, এখন উচ্ছেদের অপেক্ষায় আছি।
ঢাকায় দূষণের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে এবং অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা নিয়ে গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ৩০ জানুয়ারি একটি সম্পূরক আবেদন করে। আবেদনের শুনানি নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পাঁচ জেলায় থাকা অবৈধ ইটভাটার তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ১৬ ফেব্রুয়ারি ভার্চুয়ালি আদালতে যুক্ত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ধার্য তারিখে (১৬ ফেব্রুয়ারি) আদালত পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা প্রশাসকদের বক্তব্য শোনেন।
এদিন অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৈধ-অবৈধ ইটভাটার তালিকা দাখিল করা হয়। ঢাকাসহ আশপাশের ৫ জেলার ৩১৯টি অবৈধ ইটভাটার তথ্য এদিন আদালতকে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। পাঁচ জেলা হলো ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ। এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে ১ মার্চ ঢাকাসহ পাঁচ জেলার অবৈধ ইটভাটার সব ধরনের স্থাপনাসহ নির্মাণসামগ্রী ধ্বংসের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। জানতে চাইলে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান জানান, তার জেলায় অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা ৪৬। এর মধ্যে ৩৩টি বন্ধ করা হয়েছে। গাজীপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রমে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২ বছরে ১৭৪টি ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখানে বৈধ ইটভাটার সংখ্যা ৭৩।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশের কপি পেয়েছি। আদেশ মোতাবেক উচ্ছেদের কার্যক্রম শিগগিরই পরিচালনা করা হবে। রিটকারী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পেয়েছে। এখনো উচ্ছেদের কোনো খবর পাইনি। তবে গণমাধ্যমে দেখেছি ধামরাই ও সাভারের প্রশাসন বলেছে, তারা শিগগিরই উচ্ছেদ শুরু করবে। তিনি বলেন, অনেক সময় দেখি, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় অবৈধ ইটভাটার মালিককে। মালিকরা কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করেন। তাতে তাদের কী হয়? তারা চান জরিমানা দিয়ে কার্যক্রম চালাতে। কিন্তু যেখানে আইনে সরাসরি বলা আছে, লাইসেন্স না থাকলে কার্যক্রম পরিচালনাই করতে পারবে না। অর্থাৎ চিমনি বানানো, ইটের মাটি রাখা, ঘর বানানো-কোনো কিছুই করতে পারবে না।’
Leave a Reply