বিধিনিষেধ অমান্য করে ট্রলার দিয়ে যাত্রী পারাপার করায় ১৩ টি ট্রলার জব্দ করেছে নৌপুলিশ। আজ সোমবার (১০ মে) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট, কনকসার ও ঘাটের পার্শ্ববর্তী এলাকার পদ্মা নদীর বিভিন্ন জায়গা থেকে ১৩ টি ট্রলার জব্দ করা হয়।
গতকাল রবিবার একই অভিযোগে ১৮ টি ট্রলার জব্দ করা হয়েছিলো। এ নিয়ে দুদিনে মোট ৩১টি ট্রলার জব্দ করা হলো।
শিমুলিয়া ঘাট হতে নিয়মিত ফেরি না চলায় ট্রলার-বাল্কহেডে চড়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে ঈদ-ঘরমুখো লাখো যাত্রী। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ঘোসনার পর যাত্রীবাহী ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষনা করলে বিপাকে পরে দক্ষিণবঙ্গের ঘরমুখো মানুষগুলো। সড়কে ও ঘাটে পুলিশের বাধাঁ উপেক্ষা করে ভিন্ন কৌশলে পদ্মা পাড়ি দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে মরিয়া ২১ জেলার ঈদ ঘরমুখো মানুষ। আর এ সুযোগে কতিপয় অসাধু চক্র সিন্ডিকেট গড়ে তুলে জনপ্রতি ৩ থেকে ৫’শ টাকা নিয়ে লৌহজং ও শ্রীনগর উপজেলার একাধিক পয়েন্ট দিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে পদ্মা পারাপার করে দিচ্ছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর চোরাই পথে পদ্মা পারাপার ঠেকাতে রোববার ১৮টি সোমবার ১৩ টি ট্রলার জব্দ করেছে নৌ পুলিশ।
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার ঈদ ঘরমুখো মানুষ ছুঁটে আসছে শিমুলিয়া ঘাট ও আশপাশ এলাকায়। তারা ভাড়া যানবাহনের মাধ্যমে শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে আসার পথে ঘাটের অদূরেই পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ছে। আর শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগে ঈদ ঘরমুখো যাত্রীদের পারাপার করতে স্থাণীয় একটি অসাধু চক্র অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। শ্রীনগর উপজেলার কবুতরখোলা, লৌহজংয় উপজেলার কান্দিপাড়া, যশলদিয়া, কনকসার,শিমুলিয়া বাজার ও পদ্মার চর, মাওয়া পুরাতন ফেরিঘাট ও মাওয়া মৎস্য আড়ত সংলগ্ন নদী তীরবর্তী স্পট দিয়ে স্থাণীয় একটি অসাধু চক্র যাত্রী প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে ঝুঁকিপূর্নভাবে পদ্মা পারাপার করে দিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু ট্রলারই নয়, বালুবাহি বাল্কহেড ও মাছ ধরার ট্রলারে করেও ঈদ ঘরমুখো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌরুট পারাপার হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সিরাজুল কবির বলেন, ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো যাত্রীরা ফেরী বন্ধ থাকায় শিমুলিয়া ঘাটে না গিয়ে মাওয়ার দিকে আসে।
মাওয়া পুরাতন ফেরিঘাটের দিকে চলে যাওয়ার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে পুলিশ। এখানে একটি সিন্ডিকেট চক্র ট্রলার দিয়ে নৌরুটের চরজানাজাত ঘাট ও আশপাশ এলাকায় পারাপার করে দিচ্ছে। খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে ২ দিনে ৩১টি ট্রলার জব্দ করা হয়। এর মধ্যে আজ সোমবার মোট ১৩ টি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে।
এ সময় ১৩ জন ট্রলার চালককেও আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে লৌহজং উপজেলা এ্যাসিল্যান্ড ইকবাল হোসেন ১৩ জনকে ৩৬ হাজার টাকা জড়িমানা করে। ১১ জনকে ৩ হাজার করে ৩৩ হাজার এবং ২ জনকে মোট ১৫ শত করে ৩ হাজার টাকা জড়িমানা করা হয়।যাত্রীদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়ছে।
ঘাট সূত্র জানায়, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ রেখেছে বিআইডব্লিউটিসি। তবে এম্বুলেন্স পারাপারের জন্য মাঝে মাঝে ছেড়ে যাচ্ছে ফেরী। ঘাটে ও মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সড়কে চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি ও পুলিশ। শুধু মাত্র পন্যবাহী যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোন যানবাহনকেই ঘাটে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নৌরুটের ফেরিবহরে ফেরিগুলো ভাসমান ডগ ইয়ার্ডে ও মাঝ পদ্মায় নোঙরে রাখা হয়েছে।
Leave a Reply