1. admin@dwiptv.com : dwiptv.com :
  2. dwiptvnews2121@gmail.com : sub editor : sub editor
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

জারিকারক থেকে কোটিপতি বাবুল

মোঃ কলিম উল্লাহ, বিশেষ প্রতিনিধি :
  • আপডেট: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫
জারিকারক থেকে কোটিপতি বাবুল
জারিকারক থেকে কোটিপতি বাবুল

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্য্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী জারিকারক বাবুল কান্তি নাথ। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুবাদে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২০১১ সালে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে চাকুরী ভাগিয়ে নেন বাবুল।
চাকুরীর বেশির ভাগ সময় পার করেছেন নিজ উপজেলা লোহাগাড়ায়। দীর্ঘ একযুগের অধিক সময় নিজ উপজেলায় চাকুরীর সুবাদে তিনি দূর্নীতির স্বর্গরাজ্য তৈরী করেছেন।

অভিযুক্ত বাবুল কান্তি নাথ(৪২)উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের পশ্চিম কলাউজানের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা শ্যামাচরণ নাথের পুত্র। বাবা মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুবাদে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার আরো দু-ভাই সরকারি চাকুরীতে রয়েছেন। একজন ডাকবিভাগে অপরজন পুলিশ বাহিনীতে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, তিন বছর পূর্ণ হলে অন্যত্র
বদলী হওয়া বাধ্যতামূলক হলেও বাবুল নানা কৌশলে দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে রয়ে গেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব ও মোটা অঙ্কর ঘুসের বিনিময়ে তিনি বদলি ঠেকিয়ে রেখেছিলেন।পরিশেষে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতবছর তাকে চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলায় বদলী করা হলে ও যোগদানের কিছুদিন পর সংযুক্তিতে যোগদান করেন লোহাগাড়া উপজেলায়। যোগদানের পর আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেন বাবুল।

অনিয়ম, তদবির-বাণিজ্য, অবৈধ বালু, পাহাড় কাটা ও ইটভাটা মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ার মাধ্যমে গড়েছেন বিশাল সম্পদের পাহাড়। তা দিয়ে করেছেন আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি, একাধিক স্হানে নামে বেনামে জায়গা কিনে করেছেন দোকানপাট, মৎস্যখামার, গবাদী পশুর খামার, ওয়ার্কশপ ও গ্যারেজ। রয়েছে দুইটি স্ক্যাবেটর ও দুইটি ডাম্পার গাড়ি। সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যান বাবুল।

স্হানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানানা, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে পরিবারটি ছিল একটি আতঙ্কের নাম। তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি ও মৎস্য ঘের দখল ও দখল, মারধরের অভিযোগ ও রয়েছে।
শুধু তাই নয় সে ৫আগস্ট ছাত্র জনতার মিছিলে হামলায় মোমেন হোসেন জয় কর্তৃক লোহাগাড়া থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারনামীয় আসামী বাবুল।

বাবুল কান্তি নাথ নিজ উপজেলায় এক যুগেরও বেশি সময় কর্মরত থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইউএনও’র মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও মামলার ভয় দেখিয়ে ইটভাটা, ডাম্পার মালিক, স্ক্যাবেটর মালিক, বালু উত্তোলন সিন্ডিকেট ও ভূমিদস্যু চক্রের কাছ থেকে কয়েক বছরে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। আর এই টাকায় নিজ গ্রামে নামে বেনামে কিনেছেন কয়েক কোটি টাকার জমি। অর্ধকোটি টাকায় করেছেন বাড়ি।

একাধিক ভূক্তভোগী জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের জারিকারক বাবুল কান্তি নাথ ইউএনও’র মাধ্যমে অভিযানের ভয় দেখিয়ে বালু উত্তোলন চক্র, ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট, অবৈধ ইটভাটার মালিক, ডাম্পার মালিক ও স্ক্যাবেটর মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বলে জানান তারা।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের (অফিস সহায়ক) হিসাবে চাকরিতে যোগদান করেন বাবুল। কয়েক মাসের মধ্যে তিনি পদায়ন হন নিজ উপজেলায়। এরপর থেকেই তিনি একযুগ ধরে নিজ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করেছেন। অবশ্য এর মধ্যে দু-একবার বদলীর আদেশ আসলে ও অদৃশ্যকারন আর উচ্চমমহলে তদ্বীরে বদলীর আদেশ ফাইল বন্দী হয়ে পড়ে ছিল।

স্থানীয়রা বলেন, ওই পরিবার এখন আঙুল ফুলে কলাগাছ। আগে কী ছিল আর এখন কী হয়েছে তা সবার জানা। দুর্নীতি না করলে কি কেউ এত সম্পদের মালিক হতে পারেন? অনিয়ম ও-দুর্নীতি ছাড়া একজন সরকারি কর্মচারীর এত সম্পদ অর্জন সম্ভব নয় বলে ও মন্তব্য করেন অনেকেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জারিকারক বাবুল কান্তি নাথ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমাকে দেশ থেকে চলে যাবার একটা ব্যবস্হা করে দেন, আমার টাকার প্রতি সবার লোভ পড়েছে। বদলী প্রসঙ্গে তিনি জানান, আদেশ আসার পরেও না ছাড়ার বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ভালো জানবেন। তাদের সাথে কথা বললে বিষয়টি বুঝতে পারবেন।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: সাইফুল ইসলাম’র কাছে জানতে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি,হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

আমাদের এন্ড্রয়েড এপস আপনার মোবাইলে ইন্সটল করুন।

Developer By Zorex Zira