নিজের ১০ বছর বয়সী শিশুকে নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছিলেন আপন বাবা। এমন ঘটনা মাকেও সে বিশ্বাস করাতে পারছিল না। শেষমেশ মায়ের পরামর্শেই ধর্ষণের ঘটনা মোবাইলে ধারণ করানোর পর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ধর্ষক বাবা। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে এমন ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী এলাকার বলুয়ারদিঘির পাড় এলাকায়। রাতে এ ঘটনায় নিজে বাদি হয়ে একটি মামলা (নম্বর ২১) দায়ের করেছেন ধর্ষকের স্ত্রী শিশুটির মা। ধর্ষণের শিকার কন্যাশিশুটি রাত দুইটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার শিশুটির মা গার্মেন্টসে কাজ করেন। অন্যদিকে বাবা প্রদীপ বণিক চকবাজার মতি টাওয়ারে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। তিনি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার লোক হলেও দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে বসবাস করছেন সপরিবারে। জানা গেছে, প্রতিদিন শিশুটির মা যখন গার্মেন্টসের কাজে বেরিয়ে যান, বাবা তখন নাইটগার্ডের চাকরি শেষে বাসায় ফেরেন। এ সুযোগে বেশ অনেকদিন ধরে নিজের কন্যাশিশুটির সঙ্গে অনৈতিকভাবে মেলামেশার চেষ্টা করে আসছিলেন বাবা প্রদীপ বণিক। এর আগে যতোবারই এমন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, শিশুটি তার মা বাসায় ফেরার পর বোঝানোর চেষ্টা করেছে। কান্নাকাটিও করতো। কিন্তু মায়ের কাছেও পুরো বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হতো। কয়েকদিন আগেও শিশুটিকে যখন বাবা প্রদীপ বণিক ধর্ষণ করে, তখন মেয়েটি সারাক্ষণই কান্নাকাটি করতে থাকে। একপর্যায়ে মাকে সবকিছু খুলে বলে। তখন মা তাকে একটি মোবাইল হাতে দিয়ে বলেন, যখনই বাবা ওরকম কিছু করার চেষ্টা করবে, তখন মোবাইলে ভিডিও করে রাখবে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে প্রদীপ বণিক রোজকারমতো মেয়েকে বিছানায় টানার চেষ্টা করলে সে কৌশলে মোবাইলের ভিডিও সচল করে দেয়। গার্মেন্টসের কাজ শেষে বাসায় ফেরার পর সেই ভিডিও দেখে মা ও মেয়ে দুজনেই চিৎকার করে কান্নাকাটি করতে থাকে। এ সময় আশেপাশে তাদের কয়েকজন নিকটাত্মীয়ও সেখানে আসেন।এরপর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জাতীয় জরুরি সহায়তা সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনা জানানো হলে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানা থেকে পুলিশ এসে প্রদীপ বণিককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অন্যদিকে ধর্ষিতা শিশুটিকে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করানো হয়।রাত একটার দিকে এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষকের স্ত্রী শিশুটির মা নিজে মামলাটির বাদি।
Leave a Reply