যশোরে ‘লকডাউন’ বাড়লো এক সপ্তাহ। যদিও এই ব্যবস্থাকে ‘কঠোর স্বাস্থ্যবিধি আরোপ’ বলা হচ্ছে। যশোর শহরের মতো নওয়াপাড়া শহরও এই ‘লকডাউনের’ আওতায় থাকবে।
এবারের ‘লকডাউনের’ আওতায় যশোর শহর ছাড়াও পাশের চারটি ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো নূতন উপশহর, নওয়াপাড়া, আরবপুর এবং চাঁচড়া। আরো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ঝিকরগাছা পৌরএলাকা, শার্শা উপজেলার শার্শা ইউনিয়ন, বেনাপোল বাজার ।এর আগে গেল ৯ জুন দিনগত মধ্যরাত থেকে যশোর অভয়নগর উপজেলার ও নওয়াপাড়া পৌরসভা এলাকায় ‘কঠোর স্বাস্থ্যবিধি আরোপ’ করা হয়। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষিতে জেলা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
সাতদিন পর উল্লিখিত কমিটির সভা বসে।সভায় সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করে ‘লকডাউনের’ সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে কমিটির অন্যতম সদস্য প্রেসক্লাব যশোর সভাপতি জাহিদ হাসানএই তথ্য দেন। পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় থেকেও বিষয়টি জানানো হয়।
‘লকডাউন’কালে আগের বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। জেলার অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীবাস চলবে না। তবে দূরপাল্লার গাড়ি চলবে। রোগী পরিবহনকারী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্য পরিবহনকারী ট্রাক প্রভৃতি ক্ষেত্রে এই আদেশ কার্যকর হবে না।
কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্যের দোকান সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে অন্য ধরনের দোকানপাট, শপিংমল, বিপণীবিতান বন্ধ থাকবে। ওষুধের দোকান বিধিনিষেধের আওতামুক্ত। এছাড়া আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বপালনকারী, কৃষি উপকরণ ও খাদ্যসামগ্রী পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড টিকাদান, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থলবন্দর, টেলিফোন, ইন্টারনেট সেবাদাতা, গণমাধ্যম, বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মুদ্রণালয়, ডাকসেবাসহ অন্যান্য জরুরি সেবা চলমান থাকবে। খাবারের দোকান বা রেস্তোরাঁ খোলা থাকবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। তবে সেখান থেকে শুধু খাদ্য সরবরাহ করা যাবে।
অতিজরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না। রাস্তায় বের হওয়া সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া অন্য কোনো আরোহী থাকবে না। রিকশায় একজন এবং ইজিবাইক ও অটোরিকশায় দুইজন পর্যন্ত যাত্রী বহন করা যাবে। শিল্প-কারখানা খোলা রাখা যাবে স্বাস্থ্যবিধি মানাসাপেক্ষে। পর্যটন স্পট, পার্ক, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টারসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। বিয়ে, জন্মদিন, পিকনিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে জমায়েত করা যাবে না। জরুরি নির্মাণকাজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালানো যাবে।
আজকের সভায় জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, পৌরসভার মেয়র হায়দার গণী খান পলাশ, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, দুইজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply