কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে স্বামীর অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বুধবার ৮ জুন বিকালে উপজেলা বাংলাইশ মজুমদার বাড়ির স্বামীর নিজ ঘরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেন। নিহত গৃহবধূ মারজান আক্তার কুসুম (১৯) সে উপজেলার ঝলম উত্তর ইউনিয়ন বাংলাইশ গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে দিদার হোসেনের স্ত্রী ও লাকসাম উপজেলার ফুলহারা গ্রামের আবদুল রশিদের মেয়ে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামীর ব্যবহারিত মুঠোফোনটি বন্ধ রেখে আত্নগোপন রয়েছেন।
মনোহরগঞ্জ থানার পুলিশের এস আই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে এবং নিহতের স্বজনেরা থানায় এসেছেন তারা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিহতের শাশুড়ী আয়শা আক্তার বলেন, আমার তিন ছেলের মধ্যে দিদার হোসেন সবার ছোট সে ঢাকায় একটি ডিস কোম্পানিতে লাইনে কাজ করে।বৌমা কুসুমের ও দিদারের সঙ্গে মাঝে মধ্যে ঝগড়াঝাটি হতো। কিন্তু তাদের মধ্যে বড় ধরনের কোন ঘটনা শুনতে পাইনি। ৪/৫ দিন আগে বৌমার সাথে হাসিখুশি কথা বলে দিদার ঢাকা যায়।
প্রতিদিনের মতো বুধবার দুপুরে খাবারের শেষে বৌমা নিজ ঘরে যায়। বিকাল ৩ টার দিকে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ দেখে বৌমা কে ডাকতে থাকি। তার উত্তর না পেয়ে এসময় বাড়ির লোকজন ডাকাডাকি করলে তারা দরজা খুলে দেখতে পায় বৌমা কুসুম গলায় ফাঁস দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। কেন বা কি কারনে বৌমা আত্মহত্যা করেছে তা জানিনা। নিহত গৃহবধূর বড় ভাই সোলেমান জানান, মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাংলাইশ গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে দিদার হোসেন সঙ্গে আমার বোন কুসুমের প্রেমের সম্পর্কে ছিলো। দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে গত ২০২১ সালে কোরবান ঈদের পর তাদের বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী দিদার তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। পরে আমার বাবা-মা’র একটি ব্যাংক সঞ্চয় ভেঙে কুসুমের জামাই বাড়িতে নতুন আসবাবপত্র ও নগদ টাকা দিদারের হাতে দেন। এর পর থেকে যৌতুকের প্রতি তার লালসা আরো বেড়ে যায়।
সে কুসুমকে বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা নিয়ে আসতে বলে। এ প্রস্তাবে রাজি না হলে সে ঢাকায় আরও একটি বিবাহ করবে বলে হুমকি দেয়। স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে শেষ পর্যন্ত কুসুম আত্মহত্যা করেছেন। তিনি আরো জানান, দিদার ঠিকমতো কাজ করত না। কখনো কখনো সে ডিস লাইনে কাজ করতো । প্রায়ই বন্ধুদের আড্ডায় পড়ে থাকত। এখন থানায় আছি দিদারসহ তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করবো। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে যানা গেছে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে গৃহবধূ আত্মহত্যা করতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
Leave a Reply